মঙ্গলবার, মার্চ ২, ২০২১
রাইডার্সপেন
  • প্রথমপাতা
  • গ্যারেজ
    • মেকানিক টুকিটাকি
    • সাইকেল শপ
    • সাইকেল রিভিউ
    • সাইকেল গুরু
  • লাউঞ্জ
    • পাঠকের গল্প
    • সাইকেল চিরকুট
    • সাইকেল কমিউনিটি
  • বাইকট্যুরিং
    • বাইকট্যুরিং বাংলাদেশ
    • বাইকট্যুরিং আন্তর্জাতিক
    • ট্যুর রুটপ্ল্যান
    • ক্রসকান্ট্রি বাংলাদেশ
    • ক্রসকান্ট্রি আন্তর্জাতিক
  • স্পোর্টস
    • সাইকেল রেস
    • ষ্ট্যান্ট
    • সাইক্লিং বিচিত্রা
  • প্রিয় সাইক্লিষ্ট
  • আমরা
No Result
View All Result
আপনিও লিখুন
  • প্রথমপাতা
  • গ্যারেজ
    • মেকানিক টুকিটাকি
    • সাইকেল শপ
    • সাইকেল রিভিউ
    • সাইকেল গুরু
  • লাউঞ্জ
    • পাঠকের গল্প
    • সাইকেল চিরকুট
    • সাইকেল কমিউনিটি
  • বাইকট্যুরিং
    • বাইকট্যুরিং বাংলাদেশ
    • বাইকট্যুরিং আন্তর্জাতিক
    • ট্যুর রুটপ্ল্যান
    • ক্রসকান্ট্রি বাংলাদেশ
    • ক্রসকান্ট্রি আন্তর্জাতিক
  • স্পোর্টস
    • সাইকেল রেস
    • ষ্ট্যান্ট
    • সাইক্লিং বিচিত্রা
  • প্রিয় সাইক্লিষ্ট
  • আমরা
No Result
View All Result
রাইডার্সপেন
No Result
View All Result
Home বাইকট্যুরিং আন্তর্জাতিক

বিশ্বের উঁচু হাইওয়েতে বাইসাইকেলে বাংলাদেশি নিয়াজ

নীরব মাহমুদ by নীরব মাহমুদ
আগস্ট ১৩, ২০১৬
in বাইকট্যুরিং আন্তর্জাতিক
0
0
SHARES
1
VIEWS
ShareTweetSend

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু হাইওয়ে বাইসাইকেলে পাড়ি দিয়েছেন বাংলাদেশি নিয়াজ মোর্শেদ। ভারতের মানালি থেকে একা ১২ দিন সাইকেল চালিয়ে লেহ হয়ে খারদুংলা পাস পয়েন্টে ওঠেন তিনি। পাড়ি দেন ৫১৫ কিলোমিটার। খারদুংলা পাস সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮ হাজার ৩৮০ ফুট উঁচু। চন্দন চৌধুরীকে তিনি শোনালেন সেই গল্প।

পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু এই হাইওয়েতে পাঁচটি মাউন্টেন পাস। মানে পাঁচটি পাহাড়ের চূড়া। সবচেয়ে উঁচুটা খারদুংলা পাস। ভারতের মানালি থেকে গেলে এটা সবার শেষে। এই হাইওয়ে পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু গত বছরের শেষ থেকে। পথটি মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত খোলা থাকে। বাকি সময় থাকে বরফে ঢাকা। যাঁরা এই পথ পাড়ি দেন, তারা এ সময়ের মধ্যেই দিয়ে থাকেন। আমার কাছে মনে হয়েছে সবচেয়ে ভালো সময় জুলাই মাস। আমি জুলাই মাস বেছে নিই। এর আগে নিজেকে প্রস্তুত করে নিই। নেট ঘেঁটে যাঁরা সেখানে গিয়েছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতাগুলো পড়তে শুরু করি।

যাঁরা বাইসাইকেলে গিয়েছেন তাঁদের গল্প, মোটরসাইকেলে গিয়েছেন তাঁদের গল্প। জানলাম বছরের কোন সময়ে পথটা ভালো থাকে, বৃষ্টি কম থাকে, বরফ কম থাকে—এসব। তিন-চার মাস পড়ার পর নিজেকে সেভাবে তৈরি করলাম। ফিটনেস বাড়ানোর জন্য প্রতিদিন রাতে দৌড়াতাম। যেহেতু আমরা সমতলের মানুষ, আমাদের এত ওপরে থাকা বা চড়ার অভ্যাস নেই। ফ্লাইওভারগুলোতে সাইকেল প্র্যাকটিস করেছি। উঁচু আর ঢালুতে চালাতে নিজেকে অভ্যস্ত করার চেষ্টা করি। এর মধ্যে স্পন্সর হিসেবে পাশে দাঁড়াল সাইকেল লাইফ এক্সক্লুসিভ ও মেঘনা গ্রুপ। ৫ জুলাই ঢাকা থেকে বিমানে দিল্লি নামি। একই সময়ে আমার সাইকেলও কার্গোবিমানে সেখানে চলে যায়। সেখান থেকে বাস ধরি। সাইকেল তুলে দিই ছাদে। মানালি পৌঁছি ৭ তারিখ সকালে।    মানালি থেকে যাত্রা ৮ জুলাই, ঈদের দিন। দেশের জন্য মনটা তাই একটু কেমন কেমন করছিল। দেশে ফোন করে কথা বলেছি।

বাংলাদেশি নিয়াজ

সকালেই সাইকেলে চেপে বসি। সব কিছু মিলিয়ে আমার বাইকের ওজন ৩৫ কেজি। যেহেতু আমি একা, সব কিছু নিজেকেই বহন করতে হবে। পাহাড়ি পথে এই ওজন নিয়ে চলাও কঠিন। সাইকেলের ব্যাপারটা হলো সমতলে আমরা খুব জোরে চালাতে পারি। বেশি গিয়ারে চালাতে পারি। পাহাড়ে একদম কম গিয়ারে চালাতে হয়। তখন বেশি প্যাডেলিং করা লাগে, সাইকেল আগায় কম। আর আমার ইচ্ছাও ধীরে ধীরে চালানো। কারণ ১০ হাজার ফুট উঁচুর পর থেকেই অক্সিজেন কমে যায়। তখন আমাদের মতো সমতলের মানুষদের ব্রিডিংয়ের সমস্যা শুরু হয়। এ সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য প্রতিদিন কম দূরত্ব অতিক্রম করব—এমন একটা চিন্তা আগে থেকেই ছিল। ১০ দিনে আমি ৪৭৬ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছি। যেটা বাংলাদেশে হলে লাগত তিন দিন।

আমি আসলে প্রতিদিন আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করেছি। উঁচুতে উঠছি আর সেখানকার কম অক্সিজেনে অভ্যস্ত হতে চেষ্টা করেছি। মানালির কাছাকাছি প্রথম দুই দিন প্রচুর মেঘ ছিল। সকাল ১০টা-১১টায় আমাকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হয়েছে। হুট করে এত মেঘ আসে, একদম সব ঢেকে দিয়ে যায়। সামনে কিছুই দেখতে পাইনি। আমরা সাধারণত নিচ থেকে দেখি মেঘ ছুটছে। কিন্তু অনেক উঁচুতে বুঝতে পারলাম, মেঘ যেন সব কিছু কুয়াশার মতো ঢেকে দিয়ে যায়। আমি কিন্তু মেঘ দেখছি না, দেখছি কুয়াশা। শরীর ভেজা ভেজা লাগছে। ঠাণ্ডা তো লাগছেই। খুব ভারী মেঘ যখন আসে, রাস্তার পাশে বসে থাকি। একটু কমুক। কমে যায়। এমন না যে অনেকক্ষণ থাকে। তবে লাইট জ্বালিয়ে যখন দেখতাম সামনের গাড়িটাও আমাকে দেখতে পাচ্ছে, তখন ধীরে ধীরে চালাতে শুরু করতাম। কারণ তখন চালানোটা তুলনামূলক কম কষ্টের। একদম রোদ থেকে মেঘের মধ্যে সাইকেল চালানোতে কষ্ট কম। ধৈর্য ধরে রাখাটা খুব মুশকিল। দেখা যাচ্ছে আমার মিটারে গতিবেগ দেখাচ্ছে ঘণ্টায় তিন-চার কিলোমিটার। ওই দূরে দেখছি পাহাড়ের ওপর একটা ট্রাক যাচ্ছে। ছোট্ট এত্তটুকুন। ওইখানে আমাকে যেতে হবে। এ বিষয়টার সঙ্গে মানাতেই প্রথম দুই দিন চলে গেছে।

দ্বিতীয় দিন একটা পাস ছিল। রুথাং পাস। এটা খুব বিখ্যাত। মানালি থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার। তাই সব ট্যুরিস্ট গাড়ি নিয়ে ওখানে যায়। ওটা তের বা সাড়ে তের হাজার ফুট উঁচু। যেহেতু জীবনের প্রথম মাউন্টেন পাস, তাই আমার মধ্যে খুব উত্তেজনা। মাউন্টেন পাসে ওঠার পর আমার খুব ভালো লেগেছে যে উঠতে পেরেছি। সামনে আর চারটি মাউন্টেন পাস। হয়তো উঠতে পারব। একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়। প্রথম দুই-তিন দিন কিছু গাছ দেখেছি, সবুজ পেয়েছি। উচ্চতা ১০-১১ হাজার ফুটের মধ্যে ছিল। ভূ-প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী ১০ হাজার ফুট উঁচুর মধ্যে গাছ জন্মায়। এর ওপরে গেলে আর বড় গাছ থাকে না। ছোট ছোট গাছ। দূরে সাদা সাদা পাহাড়। পাহাড় দেখছি আর এগিয়ে যাচ্ছি।

চতুর্থ দিন থেকে সব ন্যাড়া হয়ে গেল। যখন ১২-১৩ হাজার ফুট ওপরে চলে গেলাম, চারপাশ শুধু বাদামি। বরফগুলো কাছে চলে এলো। কখনো কখনো এত কাছে যে হাত দিয়ে ধরতে পারছি। আমার দ্বিতীয় পাস ছিল টাঙলাংলা। এটা পার হতে গিয়ে শিলাবৃষ্টির কবলে পড়লাম। একদম শুকনা বরফ, ঠাস ঠাস করে মাথায় পড়ছে। কিচ্ছু করার নেই। কোনো শেড নেই, গাছ নেই, কিচ্ছু নেই। সঙ্গে নেওয়া ব্যাগ মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। প্রায় ২৬ কিলোমিটার গিয়েছি সাড়ে ৯ ঘণ্টায়! মানে সকাল থেকে শুরু করে বিকেল হয়ে গেছে এই পথটুকু যেতে। প্রথম পাঁচ দিন হিমাচল প্রদেশে ছিলাম। এরপর জম্মু-কাশ্মীর।

বরফের মরুভূমিতে

হিমাচল প্রদেশ থেকে বেশ ভিন্ন জম্মু-কাশ্মীর। ওটাকে বলা হয় উচ্চতর মরুভূমি আবার বরফের মরুভূমি। আমরা মরুভূমি চিন্তা করলে ভাবি বালি আর নীলাকাশ। কিন্তু ওটা ও রকম না, বড় বড় পর্বত। বাদামি রঙের। আগস্ট মাসের শেষের দিকে পুরোটা সাদা হয়ে যাবে। সেখানে শিলাবৃষ্টি, কয়েকবার ধূলিঝড়ের মধ্যে পড়ি। দেখছি ঘূর্ণির মতো ধূলি আসছে। সব ঢেকে দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কিছু করার ছিল না।

কাশ্মীরের মানুষ সচরাচর বৃষ্টি দেখে না। আমি তিন দিনই বৃষ্টি পেয়েছি। আকাশ ধূসর ছিল। নীল আকাশ কমই পেয়েছি। হয়তো ওই সময়ের আবহাওয়াটাই এমন। সাইকেল চালাচ্ছি। পাশে বিশাল খাদ। সেই খাদগুলোর দিকে তাকালে যেন টানত। পাশাপাশি বৈরী আবহাওয়া। পেছন দিক থেকে রোদ, পিঠ পুড়ে যাচ্ছে। আবার সামনের দিক থেকে এত বাতাস যে নাক-মুখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে দুই রকম। আবার যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছি, মুখে রোদ আর পিঠে খুব ঠাণ্ডা লাগছে। খুব চরম ভাবাপন্ন রকমের একটা আবহাওয়া। যখন রোদ তো খুব রোদ, আবার রাতে খুব ঠাণ্ডা। জ্যাকেট, হাত মোজা পা মোজা পরে বসে আছি; কিন্তু ঠাণ্ডা থেকে বাঁচা কঠিন। এর মধ্যে দ্বিতীয়দিনের পর নবম দিনে গিয়ে গোসল করেছি। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ছিল, গরম পানি করার ব্যবস্থা ছিল না। রোদে ও বরফে নাক-গাল পুড়ে গিয়েছিল। হাত দিলে মুখের চামড়া উঠে আসত।  সপ্তম দিনে আমি তৃতীয় পাস এবং অষ্টম দিনে পরপর দুটি পাস পাড়ি দিই। দশম দিন পৌঁছি লেহতে।

মাঝখানে শুধু দুইটা গ্রাম পেয়েছি

দ্বিতীয় দিনে একটা গ্রামের দেখা পেয়েছিলাম। গ্রাম বলতে স্কুল আছে, বাচ্চারা আছে। এরপর নবম দিন, লেহ-র ৫০-৬০ কিলোমিটার আগে একটা গ্রাম দেখি। দ্বিতীয় থেকে নবম দিনের মাঝে আর কোনো গ্রাম ছিল না। শুধু ন্যাড়া পাহাড়। মাঝে তিনটি পুলিশ ক্যাম্প। ওরা শুধু পাসপোর্ট চেক করে। ছয় দিন নেটওয়ার্কের বাইরে ছিলাম। পরিবারের সবাই চিন্তায় ছিল। একবার একটা স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে মানালির এক বন্ধুকে জানিয়েছিলাম যে ঠিক আছি। তারপর লেহ-তে গিয়ে ফোনে যোগাযোগ হয়। তখন শ্রীনগরে গণ্ডগোল চলছিল। লেহ-তে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ফলে এই ভ্রমণের কোনো খবর বা ছবি পাঠাতে পারিনি। থাকা-খাওয়ার ব্যাপারটা একটু অন্য রকম ছিল। ধাবার মধ্যে থাকা খাওয়া। ধাবাগুলো তাঁবুর মতো। একসঙ্গে অনেক লোক থাকা যায়। মে থেকে আগস্ট—এই চার মাস মানালি ও লেহয়ের কিছু ব্যবসায়ী পথের মাঝে মাঝে অস্থায়ী ধাবা তৈরি করে। কারণ এই চার মাস ট্যুরিস্ট থাকে। খাবার নিয়ে সমস্যা নেই। চাল, ডাল, সবজি, ডিম—সবই পাওয়া যায়। ওদের নুডলস আর স্যুপ খুব জনপ্রিয়।

আগে থেকেই জেনে গিয়েছি কোথায় কোথায় ধাবা আছে। সেই হিসাবমতো সাইকেল চালাতাম। পরিকল্পনা থাকত, এক দিনের যাত্রা শেষ হবে একটা ধাবায় গিয়ে। ওখানে গেলে খাবার পাব, থাকতে পারব। ধাবার ভেতরে টানা বিছানা থাকে। বিছানার সামনেই টেবিলের মতো। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ওখানেই খাবার সারা যায়। থাকার জন্য এক-দুই শ রুপি নেয়। এক-দেড় শ রুপিতে রাতের খাবার হয়ে যায়। কোনো কারণে যদি দিনের শেষে কোনো ধাবায় পৌঁছানো  না যায়, রাতটা তাহলে পাহাড়েই কাটাতে হবে। তখন যেকোনো কিছু ঘটতে পারে। পাহাড়ধস হতে পারে, বরফধস হতে পারে, পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমন সমস্যার জন্যও প্রস্তুতি নিয়ে গেছিলাম। সঙ্গে স্লিপিং বেড ছিল। তাঁবু নেইনি। কারণ বাংলাদেশের তাঁবু ওখানে বিশেষ কাজে দেবে না। রাতে ওখানে দুই-তিন ডিগ্রি তাপমাত্রা আর প্রচণ্ড বাতাস। তাঁবু ভেঙে যাবে। ভারী প্লাসিক শিট নিয়ে গিয়েছিলাম। যেন পেঁচিয়ে কোনো রকমে বাঁচতে পারি। সঙ্গে শুকনো খাবার ছিল। বিস্কুট, কিশমিশ, কয়েক রকমের বাদাম, মধু ও রসুন।

মাঝপথে বাধা

লেহ-তে পৌঁছে একদিন বিশ্রাম নিই। পরদিন খারদুংলায় যাব—এমনই চিন্তা। খারদুংলায় যেতে ডিসির অনুমতি লাগে। পরদিন ডিসি অফিসে যাই। ওরা বলল, কাশ্মীরের অবস্থা খারাপ। বাংলাদেশি, পাকিস্তানি, শ্রীলঙ্কানকে অনুমতি দেওয়া যাবে না। তাদের বলি, ‘আমি ১০ দিন সাইকেল চালিয়ে এখানে এসেছি। বাংলাদেশ থেকে প্রথম আমি খারদুংলা পাসে সামিট করতে চাচ্ছি। তোমরা আমাকে সাহায্য করো।’ আমার কথায় ওরা একটু সদয় হলো। জানাল, কোনো একটি ট্যুরিজম কম্পানির পক্ষ থেকে তাদের কাছে গেলে অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। এতে করে আমার কিছু বাড়তি পয়সা গচ্ছা গেল। তার পরও অনুমতি তো পাওয়া গেল।

বাংলাদেশি নিয়াজ

অবশেষে সামিট

পরদিন সাইকেলে যত ব্যাগ ছিল, সব নামিয়ে ফেলি। একদম কম ওজনের মধ্যে নিয়ে আসি। এক দিনের মধ্যেই সেখানে গিয়ে ফিরতে হবে। তাই সব কিছু হোটেলে রাখলাম। যেগুলো না নিলেই নয়, যেমন হালকা একটা ব্যাগে ক্যামেরা, কিছু শুকনো খাবার, চাকার একটা টিউব, দুই লিটার পানি নিই। কয়দিনের টানা জার্নিতে আমার মধ্যে বেশ ক্লান্তি পেয়ে বসেছিল। ভোরেই বেরিয়ে পড়ি। বৃষ্টি হচ্ছিল। তোয়াক্কা করলাম না। আস্তে-ধীরে যেতে থাকি। মাথা খুব ঠাণ্ডা ছিল। এ ক্ষেত্রে গত ১০ দিনের অভিজ্ঞতাটা বেশ কাজে দিয়েছিল। এমন ভাবিনি যে এই তো সামনে, এই তো চলে এলাম। রাস্তা মোটামুটি ২০-২২ কিলোমিটার ভালো ছিল। তারপর একটু খারাপ। ৩০ কিলোমিটার পর একটি আর্মি ক্যাম্প পেলাম। যেখানে অনুমতিপত্রটা দেখাতে হয়। ওদের দেখালাম। ওরা তো অবাক, ‘তোমার দেশ বাংলাদেশ, তোমাকে অনুমতি দিল!’ যেহেতু অনুমতিপত্র আছে, তারা আমাকে ছাড়তে বাধ্য। ওখানে কলকাতার একজন  আর্মি ছিল। সে বলল, ‘তুমি বাংলাদেশ থেকে আসছ! খুব ভালো খুব ভালো।’ রাস্তায় সবাই আমাকে প্রেরণা দিয়েছে, সাহস জুগিয়েছে। কারণ আমি একা একা সাহস করেছি। ওখানে সাইক্লিস্টরা মূলত দলগতভাবে যায়। অনেক ভারতীয় সাইক্লিস্ট দলের সঙ্গে ব্যাকআপ জিপও দেখেছি। জিপে ব্যাগ, খাবারদাবার, তাঁবু—সব কিছু রাখে। এমনকি তাদের সঙ্গে মেকানিকও থাকতে দেখেছি। এসব থাকলে তো আত্মবিশ্বাস এমনিতেই পঞ্চাশ ভাগ বেশি থাকে। আমার আত্মবিশ্বাস ছিল, সাইকেলে কোনো সমস্যা হলে সারাতে পারব। ওরা আমাকে সব সময় বলেছে, তুমি পারবে। যাও। তুমি যেহেতু বাংলাদেশ থেকে এতটা সাহস করে চলে এসেছ, তুমি পারবে।

এই রুটে মোটরসাইক্লিস্টদের খুব দাপট। ওরা যাওয়ার সময় হাত উঁচিয়ে দেখাত বা স্যালুট করত। মোটরসাইকেলেও এটা পাড়ি দেওয়া কঠিন। কারণ মাঝখানে প্রায় ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো পেট্রল পাম্প নেই। আমার সঙ্গে ছিল বাংলাদেশের পতাকা। তারপর দুপুর দুইটা-আড়াইটার দিকে খারদুংলার ওপর পৌঁছি। ওঠার পর আর আবেগ ধরে রাখতে পারিনি। কেঁদে ফেলেছি। এত দিনের স্বপ্নটা আজ সফল হলো। আমি পেরেছি। আমি এত আত্মবিশ্বাসী ছিলাম না। ভেবেছিলাম, না পারলেও সমস্যা নেই, চেষ্টা করব। ছবি তুললাম। ছোট্ট একটা ভিডিও করলাম।

ইউটিউবে বাংলাদেশি সাইক্লিস্টদের ভিডিও পাওয়া দুষ্কর। পুরো ট্রেইলটা নিয়ে একটা ভিডিও আমরা ছাড়ব। একটা বাংলাদেশি ছেলে যখন খুঁজবে, তখন দেখবে, বাংলাদেশের পতাকাসহ ট্রিপটা হয়েছে। সামনে আরো যাবে। আগামী বছর হয়তো আরো ১০ জন বাংলাদেশি যাবে। জুলাইয়ের ৮ তারিখে মানালি থেকে সাইকেল চালানো শুরু করেছিলাম, ১৭ তারিখ লেহ পৌঁছি। ১৮ তারিখ বিশ্রাম নিই। আর ১৯ তারিখ ১২তম দিনে খারদুংলা পাস আমার স্বপ্ন।

বাইসাইকেলের নিয়াজ

ঢাকার ছেলে নিয়াজ মোর্শেদ। এখানেই বেড়ে ওঠা। ছোটবেলা থেকেই ঘোরাঘুরির শখ। স্কুল পালিয়ে চলে যেতেন এদিক-ওদিক। তবে তখন তিনি সাইকেল চালাতেন না। ২০১১ সালের শেষের দিকে সাইকেল কেনেন বিডি সাইক্লিস্ট দলের প্রেরণায়। ঢুকে যান সেই দলে। সেখানে অবশ্য ঢাকা শহরে যাতায়াতের ভাড়া ও সময় বাঁচানোরও একটা বিষয় ছিল। এরপর ঘোরাঘুরির নেশার সঙ্গে যোগ হয় সাইকেল। নিয়াজ বললেন, ‘একদিন ইচ্ছা হলো সাইকেলে গাজীপুর যাব। গেলাম। কষ্ট হয়েছে খুব। কিন্তু জার্নিটা বেশ মজার। একদিন মাওয়া গেলাম। সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ঘুরে চলে এলাম। তখন মনে হলো তো সাইকেলে সারাটা দেশ ঘুরে দেখতে পারি। এতে আমার তেমন টাকাও খরচ হবে না। আর একটা বিষয়, যাওয়ার পথে মন চাইলে সাইকেল থামিয়ে ইচ্ছামতো সব দেখা যাবে। যেমন একটা ক্ষেত দেখতে ভালো লাগছে। আমি সাইকেল থামিয়ে বসে থাকলাম। এটা সাইকেল দিয়েই সম্ভব।

ওভাবেই সাইকেলে ঘুরে বেড়ানোর নেশাটা জন্মায়। ওখান থেকেই ঘোরাঘুরিটা শুরু করি।’ চৌষট্টি জেলায় সাইকেল চালিয়েছেন নিয়াজ। সাইকেল চালানোর একটা জনপ্রিয় বিষয় হলো ক্রস কান্ট্রি। দেশকে ক্রস করা। বাংলাদেশকে আটভাবে ক্রস করেছেন তিনি। একেবারে প্রান্তিক এলাকাগুলোতে যেতে পছন্দ করেন নিয়াজ। মাঝে মাঝে বাংলাদেশের মানচিত্র নিয়ে বসে পড়েন। যদি মনে হয়, মানচিত্রের একটা জায়গায় তিনি যাননি। বেরিয়ে পড়েন সাইকেল নিয়ে। দেশ দেখা যখন শেষ, তখনই চিন্তাটা হয় দেশের বাইরে নতুন কিছু দেখা। আর তার কারণেই এ বছর জানুয়ারিতে মালয়েশিয়ায় একটা রাইডে যান। মালয়েশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর। চার দিনে এক হাজার কিলোমিটার পাড়ি। তার মতে, এটা ছিল একটু কঠিন রাইড। সেখানে সাইকেল চালানোর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হয়েছিল। খুব স্পিডে সাইকেল চালাতে হয়েছিল। নিয়াজ বলেন, ‘আমার স্বপ্ন বাংলাদেশি সাইক্লিস্টের সাত মহাদেশ জয়।

বাংলাদেশের সাইক্লিস্ট, বাংলাদেশের পতাকা সাতটা মহাদেশে যাবে। হয়তো আমি পারব না। পৃষ্ঠপোষকতা, সাপোর্ট—এসব ব্যাপার রয়েছে। অনেক টাকাপয়সার ব্যাপার। আমার স্বপ্নটা এ রকম। আমি হয়তো শুরু করে গেলাম। আমি না পারি, অন্যরা পারবে।’ সাইকেল শুধু চালানই না, ছোট একটা দোকানও দিয়েছেন সাইকেলের। পাশাপাশি করেন ফ্রিল্যান্স গাইডের কাজ।

Previous Post

মৌডুবি থেকে আগুনমুখা নদীর তীর ধরে কাটাখালির পথে আমরা

Next Post

টেকনাফ থেকে কলকাতা – দুই চাকায় পাড়ি দিলেন ৮০২ কিলোমিটার

নীরব মাহমুদ

নীরব মাহমুদ

Next Post

টেকনাফ থেকে কলকাতা - দুই চাকায় পাড়ি দিলেন ৮০২ কিলোমিটার

Please login to join discussion

Recommended

ক্রসকান্ট্রির ডায়েরী ; শিবচর থেকে বরিশাল

3 বছর ago

ফ্লুরিয়ানের বাংলাদেশ ভ্রমণ

4 বছর ago

Trending

জার্নি টু দি মাওয়া ফেরি ঘাট ফর ইলিশ

5 বছর ago

সারাসেন টাফট্র্যাক্স ম্যানস রিভিউ

5 বছর ago

Popular

টেকনাফ থেকে কলকাতা – দুই চাকায় পাড়ি দিলেন ৮০২ কিলোমিটার

4 বছর ago

জার্নি টু দি মাওয়া ফেরি ঘাট ফর ইলিশ

5 বছর ago

সারাসেন টাফট্র্যাক্স ম্যানস রিভিউ

5 বছর ago

মৌডুবি থেকে আগুনমুখা নদীর তীর ধরে কাটাখালির পথে আমরা

5 বছর ago

সাইকেলে ২৪ ঘন্টায় ৫০০ কিলোমিটার!

5 বছর ago
  • স্যোশাল মিডিয়াতে ফলো করুন

© রাইডার্সপেন ২০১৭ – ২০২০
সম্পাদক ও প্রকাশক : হাফিজুল ইসলাম নীরব
১৩৪১/২ পূর্ব শেওড়াপাড়া (৫ম তলা) | রানওয়ে রোড, কাফরুল, ঢাকা – ১২০৮ । ফোন : +৮৮০১৫৩৩৩৫৪৮২৭ (টেকনিক্যাল) |
ইমেইল: editor@riderspen.com

© ২০২০ রাইডার্সপেন স্বত্ত্ব সংরক্ষিত- ওয়েবসাইট নির্মাণ কোডসপাজল

  • ডিসক্লেইমার
  • গোপনীয়তার নীতিমালা
  • বিজ্ঞাপন
  • যোগাযোগ
No Result
View All Result
  • প্রথমপাতা
  • গ্যারেজ
    • মেকানিক টুকিটাকি
    • সাইকেল শপ
    • সাইকেল রিভিউ
    • সাইকেল গুরু
  • লাউঞ্জ
    • পাঠকের গল্প
    • সাইকেল চিরকুট
    • সাইকেল কমিউনিটি
  • বাইকট্যুরিং
    • বাইকট্যুরিং বাংলাদেশ
    • বাইকট্যুরিং আন্তর্জাতিক
    • ট্যুর রুটপ্ল্যান
    • ক্রসকান্ট্রি বাংলাদেশ
    • ক্রসকান্ট্রি আন্তর্জাতিক
  • স্পোর্টস
    • সাইকেল রেস
    • ষ্ট্যান্ট
    • সাইক্লিং বিচিত্রা
  • প্রিয় সাইক্লিষ্ট
  • আমরা

Copyright © 2012 - 2017, JNews - Premium WordPress news & magazine Jegtheme.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Create New Account!

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist